Khaborer Patrika
ঢাকাশুক্রবার , ১৪ জুন ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নন্দীগ্রামে টুংটাং শব্দে মুখরিত কামার পল্লী

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
জুন ১৪, ২০২৪ ৭:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আর মাত্র ২দিন বাকি ঈদুল আযহার। তাই পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার কামার শিল্পীরা।

ভোর হতে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত কামার পল্লীগুলোতে ব্যস্ততার চিত্র দেখা যায়। কোরবানির পশুর মাংস কাটাকাটি আর চামড়া ছাড়ানোর জন্য অন্যতম অনুষঙ্গ দা, ছুরি, চাপাতি, বঁটিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা।

ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে কামার শিল্পীদের কাছে গরু কাটার দা, চাপাতি, ছুরিসহ নানা জিনিস ক্রয় করছেন। আবার অনেকে ঘরে থাকা পুরোনো দা, ছুরি, চাপাতি ধার কাটাতে আসছেন। সারা বছর তৈরিকৃত এসব পণ্য যত বিক্রি হয় তার চেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঈদুল আজহা উপলক্ষে। কারণ, পশু জবাহ করার জন্য ধারালো অস্ত্রের প্রয়োজন। আর ঈদ চলে যাওয়ার পর এসব অস্ত্র সবাই সংরক্ষণ করে রাখেন। সেগুলোতে মরিচা পড়ে যায়।

তাই প্রতি বছর নতুন নতুন অস্ত্রের প্রয়োজন পড়ে। আর সে কারণেই ঈদকে কেন্দ্র করে দা, ছুরি, চাপাতি বঁটিসহ নানা পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কামার শিল্পীরা। নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার বাজার সংলগ্ন বিদ্যুৎ কর্মকার জানান, বর্তমানে কোরবানির কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রের মধ্যে নতুন বঁটি প্রকারভেদে ৫শ থেকে ৭শ টাকা, দা ১হাজার থেকে ১২শ টাকা, ৮ ইঞ্চি থেকে ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত মজুরি, ৩শ থেকে ৫শ টাকা , ১২ ইঞ্চি থেকে ১৫ ইঞ্চি ১হাজার এবং ছোট আকৃতির ছুরি ৫০ থেকে দেড়শ’ টাকা দামে বিক্রয় হচ্ছে। পুরাতন বাজারের কর্মকার রবি চন্দ্র জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর এসব জিনিসের বিক্রি কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছি।

বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানির সময়টায় আমাদের কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় তাদের আয় রোজগারও। ওমরপুর হাটের শাহীন কর্মকার জানান, কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি হচ্ছে কয়লা, কিন্তু এই কয়লা এখন আর তেমন পাওয়া যায় না, গ্রামে ঘুরে ঘুরে এই কয়লা সংগ্রহ করতে হয়। এই কয়লার অপ্রতুলতায় দাম অনেক বেড়ে গেছে বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সে অনুসারে কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি।

ইসবপুরের স্বদেব কর্মকার জানান, ঈদ উপলক্ষে এক মাস কাজের চাপ থাকলেও পরবর্তী ১১ মাস তেমন কোনো কাজ হয় না। এর কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে পৈতৃক এ পেশা বাদ দিয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। এছাড়া অন্য সময়ে দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা রোজগার করেও সংসার চালানো কষ্ট সাধ্য হয়।

সরকার মৎস্য আহরণকারী জেলেদের সাহায্য প্রদান করলেও আমাদের এরকম কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই আমরা শিল্পীদের সরকারি সাহায্য বা অনুদানের দাবি জানাচ্ছি।