সুমন কুমার নিতাই, নিজস্ব প্রতিবেদক: হুইল চেয়ার কেনার স্বপ্ন আর ইচ্ছা থাকলেও ছিল না সামর্থ্য! ছোট্ট একটি টিনের ছাউনি তোলা মুদি দোকান দিয়ে কোনমতে চলছিল জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী মোয়াজ্জেম হোসেনের অভাব অনটনের সংসার।
যেই সংসারে তেল আনতে পান্তা ফুরায় সেই সংসারের খরচ তাড়িয়ে নিজে চলাচল করার জন্য সঙ্গের সাথী হুইল চেয়ার কেনার কখনোই সামর্থ্য হয়তো কখনোই হয়ে উঠতো না মোয়াজ্জেম হোসেনের। ছোট্ট একটি মুদি দোকান দিয়েই কোন রকমের জীবন যাপন করছিলেন বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ২নং সদর ইউনিয়নের পাকুরিয়া পাড়ার মৃত আয়েজ উদ্দিন সরদারের ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন। ঠিক সেই মুহূর্তে চোখে পড়ে যায় বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, বগুড়া -০৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোশারফ হোসেনের।
১১এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে হুইল চেয়ার নিয়ে নিজেই ছুটে যান প্রতিবন্ধী মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে। সাবেক সংসদ সদস্যর হাতে চেয়ার দেখে নিজের আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ে মোয়াজ্জেম হোসেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায় মোয়াজ্জেম হোসেন কে চেয়ারে বসিয়ে নিজেই দুই হাত দিয়ে চেয়ার ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেন।
কথা হয় জীবনের সাথে যুদ্ধ করে চলা প্রতিবন্ধী মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে, তিনি এই প্রতিবেদককে জানান। অনেক আগেই বাবা মারা গেছে, ছোট্ট একটি মুদিখানার দোকান দিয়ে কোন মত চলছে সংসার, জন্ম থেকে পঙ্গু হওয়ার কারণে নিজে একা একা চলাচল করতে পারিনা। একটি হুইল চেয়ারের খুব প্রয়োজন ছিল। প্রয়োজন থাকলেও কেউ কখনো পাশে এসে দাঁড়ায়নি খোঁজ টুকুও নেয়নি কেমন আছি। কিন্তু আমার এই দুঃখ দুর্দশা কিভাবে যেন কানে যায় আমাদের প্রাণপ্রিয় এমপি সাহেবের। তিনি আর বসে থাকতে পারেননি ছুটে চলে এসেছেন আমার কাছে আমি কখনো ভাবতে পারিনি একজন এমপি এত বড় মাপের একজন মানুষ আমার কাছে আসবে তার দুহাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার দুঃখ দুর্দশার কথা শুনবে এবং নিজ হাতে আমাকে চেয়ারে বসিয়ে দিবেন আমি হুইল চেয়ার পেয়ে অনেক খুশি এখন নিজে নিজেই চলাচল করতে পারব। আমার এই উপকারের ঋণ আমি কোনদিন ভুলবো না মহান আল্লাহ তাকে সব সময় সম্মানিত করুক।
বগুড়া -০৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোশার হোসেন বলেন, ছোট্ট একটি মুদিখানার দোকান দিয়েই খুব কষ্টে জীবন যাপন করছিলেন মোয়াজ্জেম হোসেন। মোয়াজ্জেম হোসেন জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী হওয়ায় অন্যের সাহায্য নিয়ে তাকে চলাচল করতে হতো। মোয়াজ্জেম হোসেনের বিষয়টি আমার নজরে আসলে তাৎক্ষণাৎ আমি একটি হুইল চেয়ার কিনে নেতাকর্মীদের নিয়ে মোয়াজ্জেমের বাড়িতে যাই এবং তাকে হুইল চেয়ার প্রদান করি। আশা করছি সে হুইল চেয়ারে নিজেই চলাচল করতে পারবে। বিগত সময় থেকে আমি যেভাবে মানুষের পাশে ছিলাম এখনো আছি এবং সব সময় চেষ্টা করি আগামীতেও যেন ঠিক এভাবেই গরিব দুঃখী অসহায় মানুষদের পাশে কাজ করে যেতে পারি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন আদর, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাকিম, যুবদল নেতা গোলাপ হোসেন, নন্দীগ্রাম উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুয়েল রানা, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান তারেক, সিনিঃ সহ-সভাপতি নবির শেখ, সহ সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, পৌর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন সহ ওয়ার্ডের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।