বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের সিমলা উত্তর কচুগাড়ি গ্রামে সরকারি (খাস) জায়গায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মহাশ্মশান ও কালিমন্দির উচ্ছেদ করে সেই জায়গা দখল নিতে কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলাটি দায়ের করেন নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের তারাটিয়া গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর ছেলে গোলাম রব্বানী (৪৫)। এই বিষয়ে বগুড়া জজকোর্টে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে যার চূড়ায় রায় আগামী ৮ই জানুয়ারি ঘোষণা হবে।
সদর ইউনিয়নের সিমলা উত্তর কচুগাড়ি চেঁচুয়াগাড়ি মহাশ্মশানের দায়িত্বে থাকা শ্যামল চন্দ্র প্রামানিক ও নারায়ণ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, আমরা এখানে প্রায় ১শ’ পরিবার বসবাস করি। আমাদের কেউ মারা গেলে মৃতদেহ সমাধি করার মত কোন যায়গা নেই। অন্য মৌজার মধ্যে একটি মহাশ্মশান রয়েছে সেটাতে আমাদের মৃতদেহ সমাধি করতে দেওয়া হয়না। কেউ মারা গেলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই ২০ বছর পূর্বে আমাদের গ্রামের পাশেই চেঁচুয়াগাড়ি নামক স্থানে সরকারি পরিত্যাক্ত খাস জলাশয়ের ধারে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় কালিমন্দির স্থাপন করে তার পাশে মৃতদেহ সমাধিস্থ করা হয়।
শ্যামল চন্দ্র প্রামানিক ও নারায়ণ চন্দ্র প্রামানিক আরো জানান, আমাদের হিন্দুধর্মের সেই মহাশ্মশান ও কালিমন্দিরের পরিত্যাক্ত জলাশয়ের জায়গার উপর ২০১৫ সালে নজর পড়ে তারাটিয়া গ্রামের গোলাম রব্বানীর। সেসময় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমাদের কোণঠাসা করে রেখে শ্মশানের দুই দাগের প্রায় ৪৯ শতক জায়গা তার নিজের কবজায় নেওয়ার জন্য তালবাহানা করেন।
তারা আরো বলেন, গোলাম রব্বানী দাবী করেন ওই জায়গাটি সে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে। সেখানে শ্মশান এবং কালিমন্দির উচ্ছেদ করবে বলে স্থানীয়ভাবে সফল না হলে বগুড়া জজকোর্টে একটি মামলা দায়ের করে। একাধিকবার শুনানির পর ২০২৫ সালের ৮ই জানুয়ারি শ্মশান ও কালিমন্দিরের ৪৯ শতক জায়গার চূড়ান্ত রায় হবে বলে জানান তারা।
মৃত্যুর পর কোথায় ঠাই হবে? এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। কারণ তাদের শতাধিক পরিবারের মৃতদেহ সমাধিস্থ করার এখন একমাত্র সম্বল সরকারি পরিত্যাক্ত এই খাস জায়গাটি। ন্যায়বিচারের জন্য বিচারক ও বর্তমান অন্তবর্তকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিকট নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন সিমলা উত্তর কচুগাড়ি এলাকার সকল হিন্দু সম্প্রদায়।
সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আলামিন প্রামানিক বলেন, কচুগাড়ি হিন্দুধর্মের মানুষদের মৃতদেহ সৎকারের একমাত্র জায়গা চেঁচুয়াগাড়ির এই শ্মশান। তিনিও সরকারের উপদেষ্টা ও বিচারকের নিকট আকুল আবেদন করেন ৮ই জানুয়ারি মহামান্য আদালতের রায়টি যেন হিন্দুদের পক্ষেই হয়।
এ বিষয়ে গোলাম রব্বানীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।